জেনে নিন রাগ কমানোর নতুন কৌশল

৬:৩৮ PM
রাগ কমানোর নতুন কৌশল জেনে নিন
সব সময়ই রেগে থাকেন—এমন লোকের দেখা প্রায়ই পাওয়া যায়। আবার হুট করেই রেগে যান—এমন লোকের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। রাগ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাও মানুষ কম করে না। নানা রকম ধ্যান করার মাধ্যমেও অনেকে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চালান।
তবে এবার একটু ভিন্ন ধরনের একটা উপায় বাতলে দিয়েছেন নিউ সাউথ ওয়েলসের অধ্যাপক টমাস ডেনসন। ডানহাতি মানুষ যদি টানা দুই সপ্তাহ বাঁ হাত দিয়ে কম্পিউটারের মাউস ব্যবহার করেন কিংবা চায়ের কাপে চিনি মেশানো বা দরজা খোলার অভ্যাস করেন, তাহলে তাঁরা অনেক সফলভাবে রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং বিনয়ী হয়ে উঠতে পারবেন বলে এক গবেষণায় দাবি করেছেন ডেনসন। আর বাঁ হাতি মানুষদের ব্যবহার করতে হবে ডান হাত।
সম্প্রতি অধ্যাপক ডেনসনের এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে সাইকোলজিক্যাল সায়েন্সের জার্নালে। তাঁর মতে, আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই মানুষ নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। তিনি বলেছেন, মানুষের সাধারণ অভ্যাস হলো নিজেদের শক্তিশালী হাতটার ব্যবহার করা। কিন্তু অপর হাতটা দিয়ে মাউস ব্যবহার, কফিতে চিনি মেশানো বা দরজা খোলা ইত্যাদি কাজ করার মাধ্যমে মানুষ আত্মনিয়ন্ত্রণের অনুশীলন করতে পারে।
অপরাধবিজ্ঞানী ও সামাজিক-বিজ্ঞানীরা অনেক দিন থেকেই বিশ্বাস করেন যে যাঁদের আত্মনিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা কম, তাঁরা সুযোগ পেলে সহিংস অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এই তথ্য জানিয়ে ডেনসন বলেছেন, ‘একধরনের ঝোঁকের বশে এ রকম কাজগুলো করা হয়।’ ১০ বছর ধরে মনোবিজ্ঞানীরা আত্মনিয়ন্ত্রণ করার নতুন উপায় খোঁজার জন্য গবেষণা করছেন। তাঁরা দেখেছেন যে আত্মনিয়ন্ত্রণ করতে না পারা ব্যক্তিদের সঙ্গে তাঁদের আগ্রাসী মনোভাব খুবই গভীরভাবে সম্পর্কিত। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, কাউকে কিছু সময়ের জন্য নিজেদের আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাধ্য করলে পর তাঁরা আরও বেশি আগ্রাসী আচরণ করেন।
ডেনসন বলেছেন, ‘আমার কাছে, এই গবেষণার সবচেয়ে আকর্ষণীয় তথ্য হলো, আপনি যদি রাগী মানুষকে আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা উন্নয়নের সুযোগ দেন, তাহলে তাঁদের আগ্রাসী মনোভাব অনেক কমে আসে।’
তবে ব্যাপারটা এ রকমও নয় যে রাগী মানুষ নিজেদের রাগ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা একেবারেই করেন না। মুশকিলটা হচ্ছে, তাঁদের অনেকেই এটা ভালোমতো করার উপায়টা শনাক্ত করতে পারেন না। ফলে যাঁরা নিজেদের রাগ বা সহিংস আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে চান, তাঁরা এই নতুন কৌশলগুলো অনুসরণ করলে ফল পেতেও পারেন বলে বিশ্বাস ডেনসন ও তাঁর গবেষক-সহকর্মীদের।

Share this

Related Posts

Previous
Next Post »