স্ত্রীকে নিয়ে পুরুষরা কখন খুশি থাকে!

৮:৪৬ PM
1421384404_mis
বিয়েটিয়ে করে থিতু হওয়া নারীর স্বভাব। আর পুরুষেরা খেলুড়ে, মাঠজুড়ে দৌড়ায়। এমন ধারণা অনেকের মধ্যেই রয়েছে। কিন্তু তা কতটুকু সঠিক? অন্তত পুরোপুরি নয়। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষার ফলাফল নারী ও পুরুষের সঙ্গী নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘ দিনের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে।
এই সমীক্ষা চালানো গবেষকেরা দাবি করছেন, বহুগামিতার ক্ষেত্রে পারস্পরিক জোগান ও চাহিদার বিষয়টি নির্ভরশীল। একজন পুরুষের হাতের নাগালে নারীর সংখ্যা বেশি থাকলে তার চিত্ত বেশি চঞ্চল থাকে। তখন একাধিক সম্পর্ক গড়ার ব্যাপারে ঝোঁকে সে। আর নারীর সংখ্যা কম থাকলে পুরুষ একজন সঙ্গীর সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদি সম্পর্কে জড়িয়ে থাকতে আগ্রহী হয়। যখন নারীর সন্ধান পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে, তখন সবচেয়ে ভালো উপায় একজনের সঙ্গে লেগে থাকা। পুরুষেরা সেটিই করে।
সঙ্গীর সঙ্গে পুরুষের থিতু হওয়ার বিষয়টি আংশিকভাবে প্রাচুর্য ও প্রাপ্তির ওপর নির্ভরশীল। জীবনসঙ্গী হিসেবে নারীকে যেখানে সহজেই পাওয়া যায়, সেখানে পুরুষেরা অনেক ক্ষেত্রে একাধিক নারীর দিকে ঝোঁকে। আর নারীর সংখ্যা কম হলে পুরুষ এক নারীতেই খুশি থাকে।
গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে এই তথ্য দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউটা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। রয়াল সোসাইটি ওপেন সায়েন্স সাময়িকীতে তাঁদের এই গবেষণাবিষয়ক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষকেরা দাবি করেন, গায়ানার দক্ষিণ-পশ্চিমের মাকুশি উপজাতীয় বসতিতে ১৩ হাজার শিকারি, মৎস্যজীবী ও কৃষকের ওপর ১৬ মাস ধরে চালানো গবেষণা থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
ইউটা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানী রায়ান স্ক্যাচ এই গবেষণা দলের নেতৃত্ব দেন। তিনি ও তাঁর স্ত্রী জ্যাকুই ২০১০ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত মাকুশি লোকজনের ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সী ৩০০ নারী-পুরুষের সাক্ষাৎকার নেন।
রায়ান স্ক্যাচ বলেন, ‘নারীর সংখ্যা অপ্রতুল থাকলে পুরুষ এক নারী নিয়েই দীর্ঘ দিনের সম্পর্কে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকার আকাঙ্ক্ষা করে। ’
এখানে আগের বছর কার কত যৌনসঙ্গী ছিল, পরবর্তী পাঁচ বছরে এ ব্যাপারে প্রত্যেকের নিজস্ব চিন্তাভাবনা কী, ভালোবাসাহীন যৌনজীবন কতটা উপভোগ্য-এসব বিষয় বিবেচনায় আনা হয়।
নারীদের ব্যাপারে গবেষণায় জানানো হয়, পুরুষ যখন নারীর প্রত্যাশা অনুযায়ী চলতে পারে না, তখন পছন্দের মানুষ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে নারীর অনেক সুযোগ তৈরি হয়। নারী সেটি কাজেও লাগায়। নিজের পছন্দ অনুযায়ী সঙ্গী বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকলে নারী সেটি ভালোভাবেই চর্চা করে।


শেষ পর্যন্ত গবেষকের দাবী করেন, এই গবেষণা সব সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নাও হতে পারে। বিষয়টি আসলে সামাজিক অবস্থা, আর্থসামাজিক পরিস্থিতি, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বিষয়ের ওপর নির্ভর করে।

Share this

Related Posts

Previous
Next Post »