দেখে নিন যে দেশে গোলাতে দেহ ব্যবসা আইনি ভাবে বৈধ !

৫:৪৮ PM

ঢাকা: দেহ ব্যবসা। ‘আদিম রিপু’ নিয়ে এই পেশা পৃথিবীর প্রাচীনতম পেশাগুলির অন্যতম। অনেকের মতে, দেহ ব্যবসাই প্রাচীনতম। কিন্তু এত দীর্ঘ সময় পেরিয়েও সমাজের সবচেয়ে উপেক্ষিত শ্রেণির এই পেশার নাম- দেহ ব্যবসা; শুনলেই কানে আঙুল দেয় তথাকথিত ‘অভিজাতরা’।


তাই যৌনপল্লি অনেকের কাছে ‘নিষিদ্ধপল্লি’। যাবতীয় সমালোচনা, উপেক্ষা সত্ত্বেও দেহ ব্যবসা বিদ্যমান। কারণ যা-ই হোক। কিছু দেশ এই ব্যবসার উপর আইনি নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে রেখেছে। আবার বিশ্বের অনেক দেশই দেহ ব্যবসাকে আইনি স্বীকৃতি দিয়েছে। আর পাঁচটা সাধারণ পেশার মতোই।


আসুন, দেহ ব্যবসা-কে আইনি বৈধতা দেওয়া বিশ্বের সেই ১৫টি দেশের সঙ্গে পরিচিত হওয়া যাক।


১. নিউ জিল্যান্ড: নিউ জিল্যান্ডে ২০০৩ সালে দেহ ব্যবসাকে আইনি বৈধতা দেওয়া হয়। সে দেশে লাইসেন্সপ্রাপ্ত যৌনকর্মীরা সরকারি স্বাস্থ্য ও শ্রম আইনের আওতায় পড়েন। তাঁরা একই রকম সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন, যেরকম অন্যান্য পেশার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা পান।


২. অস্ট্রেলিয়া: প্রতিবেশী দেশ নিউজিল্যান্ডের মতো অস্ট্রেলিয়ার একটা বড় অংশেও দেহ ব্যবসা সম্পূর্ণ আইনস্বীকৃত। যদিও কিছু স্টেটে এই ব্যবসা নিষিদ্ধ। অস্ট্রেলিয়ায় আবার কোঠার মালিক হওয়াটা বেশ জনপ্রিয় একটি পেশা।


৩. অস্ট্রিয়া: পৃথিবীর প্রাচীতনতম এই আধুনিক রাষ্ট্রে দেহ ব্যবসা আইনত সম্পূর্ণ বৈধ। অস্ট্রিয়ায় কেউ দেহ ব্যবসা শুরু করতে চাইলে তাঁকে অবশ্যই বেশ কিছু সরকারি স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। সেই সব পরীক্ষায় পাশ করলে, তবেই মিলবে ব্যবসার ছাড়পত্র। সংশ্লিষ্ট দেহ ব্যবসায়ীর বয়স হতে হবে ১৯ বছর বা তার বেশি।


৪. বেলজিয়াম: দেহ ব্যবসাকে শুধু আইনি করাই নয়, দেহ ব্যবসায়ীদের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দিতেও যৌনপল্লির সব বাড়িতে অন্যান্য অফিসের মতোই রয়েছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রযুক্তি ও কি-কার্ডের ব্যবস্থা।


৫. ব্রাজিল: লাতিন আমেরিকার এই দেশটিতেও দীর্ঘ দিন আগে থেকেই দেহ ব্যবসা আইনত স্বীকৃত ছিল। এবং যৌনকর্মীদের অত্যাচার করলে আইনও যথেষ্ট কড়া ব্রাজিলে।


৬. কানাডা: কানাডায় যৌনকর্মীদের অবস্থা আপাত বিপজ্জনক। সে দেশে দেহ ব্যবসা আইনত বৈধ। কিন্তু যৌন সেবা কেনা ২০১৪ সাল থেকে বেআইনি হয়ে গিয়েছে। ফলে দেহ ব্যবসা ঘিরে সে দেশে একটা বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।


৭. কলম্বিয়া: কলম্বিয়ায় দেহ ব্যবসা দীর্ঘ দিন ধরেই আইনত বৈধ। সে দেশে যৌনকর্মীদের নিরাপত্তার জন্য কড়া আইনও রয়েছে।


৮. ডেনমার্ক: দেহ ব্যবসা এই দেশেও আইনি। এমনকি যে সব দেহ ব্যবসায়ীরা আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে বা গরিব, তাঁদের আর্থিক সাহায্যও করে ডেনমার্ক সরকার।


৯. ইকুয়েডর: অবাধ যৌনতার দেশ ইকুয়েডর। যৌনতা সম্পর্কিত সব কিছুই সে দেশে আইনি। যে কেউ ইকুয়েডরে দেহ ব্যবসা করতে পারেন, বা যৌনপল্লি চালাতে পারেন। কিন্তু এর জেরে ইকুয়েডরে জোর করে দেহ ব্যবসায় নামানোর সমস্যাও প্রবল।


১০. ফ্রান্স: ফ্রান্সেও দেহ ব্যবসা সম্পূর্ণ আইনি। তবে ১৯৪৬-এ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঠিক পরেই সে দেশে যৌন ব্যবসা সরকারি ভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। পরে অবশ্য সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।


১১. জার্মানি: জার্মানিতে ১৯২৭ সাল থেকে দেহ ব্যবসা আইনত স্বীকৃত। এবং সে দেশে যৌনপল্লি চালানোর জন্য আলাদা করে স্টেটও রয়েছে। জার্মানিতে দেহ ব্যবসায়ীদের স্বাস্থ্য বিমা আবশ্যিক। তাঁদের কর দিতে হয়। এমনকি অবসরপ্রাপ্ত দেহ ব্যবসায়ীদের পেনশনও রয়েছে!


১২. গ্রিস: দেহ ব্যবসায় গ্রিসের মডেলও জার্মান সরকারের মতোই। সেদেশেও যৌনকর্মীরা শ্রম আইনের আওতায় পড়েন। অবসরের পর পেনশনের সুবিধেও রয়েছে।


১৩. ইন্দোনেশিয়া: ইন্দোনেশিয়ায় দেহ ব্যবসা শুধু আইনত স্বীকৃত-ই নয়; সেক্স ট্যুরিজম সে দেশের সরকারের অন্যতম রাজস্ব আয়ের উপায়। তবে অবাধ যৌনতার জেরে ইন্দোনেশিয়ায় জোর করে দেহ ব্যবসায় নামানো বা নাবালিকা অত্যাচার ক্রমেই বাড়ছে।


১৪. নেদারল্যান্ডস: দেহ ব্যবসা নেদারল্যান্ডসে খুবই জনপ্রিয়। আইনত স্বীকৃত তো বটেই। যৌনতা নিয়ে নেদারল্যান্ডসে কোনও সামাজিক বাধা নেই। অবাধ যৌনতাই সেদেশের ট্র্যাডিশন।


১৫. বাংলাদেশ: অনেকেরই ধারণা বাংলাদেশের মতো তথাকথিত রক্ষণশীল দেশে দেহ ব্যবসা! ‘তওবা তওবা’ বলে কানে আঙুল দেওয়ার মতো একটা বিষয়! কিন্তু অবাক করা তথ্যটি হল, বাংলাদেশে দেহ ব্যবসা আইনত স্বীকৃত! এবং দেহ ব্যবসা ঘিরে দেশটিতে দুর্নীতিও আকাশছোঁয়া! বিশ্বাস করুন আর নাই করুন!

Share this

Related Posts

Previous
Next Post »